কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা কম্পিউটারের মস্তিষ্ক স্বরূপ। Arithmetic Logic Unit, Control Unit Memory Unit Central Processing Unit বা CPU বলে। সিপিইউ হচ্ছে কম্পিউটারের প্রধান চালিকা শক্তি। মাইক্রোকম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট হিসাবে মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার হয়। সিপিইউ বা মাইক্রোপ্রসেসর যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ, হিসাব-নিকাশ ও নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইসসমূহ নির্দেশ ও ডেটা গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ প্রেরণ করে। কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ প্রাপ্ত ডেটার নির্দেশ অনুসারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফলাফল প্রস্তুত করে আউটপুট ডিভাইসসমূহে প্রেরণ করে। এই সিপিইউ'র মধ্যে তিনটি প্রধান ইউনিট থাকে। যেমন-
১. অ্যারিথমেটিক লজিক্যাল ইউনিট (ALU) – (Arithmetic and Logic Unit) বা গাণিতিক যুক্তি অংশ।
২. কন্ট্রোল ইউনিট (Control Unit) বা নিয়ন্ত্রণ অংশ
৩. মেমোরি ইউনিট (Memory Unit) বা স্মৃতি ভান্ডার।
এই অংশে গাণিতিক যুক্তি ও সিদ্ধান্তমূলক সকল সমস্যার সমাধান করা হয়। অ্যারিথমেটিক লজিক ইউনিট সংক্ষেপে ALU নামে পরিচিত। প্রতিটি যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগের ফলাফলকে Control Unit (নিয়ন্ত্রণ অংশ) প্রধান মেমোরিতে প্রেরণ করে এবং আউটপুটের মাধ্যমে প্রদর্শন করে। AND, OR, NOT, NAND, NOR ইত্যাদি যুক্তি বর্তনীর মাধ্যমে গাণিতিক ও যুক্তিগত সমস্যা সমাধান করে।
নিয়ন্ত্রণ অংশ ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে কম্পিউটারে কোনো নির্দেশ বা কমান্ড দিলে, সেই নির্দেশ ও কমান্ড কোথায় যাবে, কিভাবে কাজ করবে এবং কি ধরনের কাজ করবে সেটি কন্ট্রোল ইউনিট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রথমে কন্ট্রোল ইউনিট মেমোরি থেকে নির্দেশ গ্রহণ করে রেজিস্টারে জমা রাখে। পরে নির্দেশটি কি ধরনের তা বিশ্লেষণ করে স্থির করে। কন্ট্রোল ইউনিটের কাজ হচ্ছে প্রাপ্ত নির্দেশের ভিত্তিতে কম্পিউটারের যাবতীয় কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করা। কম্পিউটারের ডেটা কোথায় যাবে, কখন যাবে, কী কাজ সম্পাদন করবে ইত্যাদির মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং নিয়ন্ত্রণ করাই হচ্ছে কন্ট্রোল ইউনিটের কাজ। কন্ট্রোল ইউনিট কম্পিউটারের যন্ত্রপাতিকেও নিয়ন্ত্রণ করে।
মেমোরি কম্পিউটারের একটি অংশ, যেখানে তথ্য জমা থাকে। কম্পিউটার কার্যকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য মেমোরিতে সংরক্ষণ করে রাখে। প্রয়োজনের সময়ে মেমোরি থেকে তথ্য নিয়ে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগসহ যাবতীয় কাজ করতে পারে। মেমোরির সাথে কম্পিউটারের অন্যান্য অংশের সরাসরি সংযোগ থাকে।
যে কোনো তথ্য দিয়ে একটি সংখ্যা, অক্ষর বা প্রতীক চিহ্ন প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এই আট বিটের শব্দকে এক বাইট বলে। আর এক হাজার চব্বিশ বাইটকে বলা হয় এক কিলোবাইট। অনেকে ১০০০ বাইটকে এক কিলোবাইট ধরে থাকেন, প্রকৃতপক্ষে তা সঠিক নয়।
মেমোরিকে সাধারণভাবে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ক) প্রাথমিক বা প্রাইমারি মেমোরি
খ) সহায়ক বা সেকেন্ডারি মেমোরি।
প্রাথমিক মেমোরির মধ্যে আছে র্যাম (RAM), রম (ROM) এবং ক্যাশ মেমোরি (Cache Memory)। আর স্টোরেজ ডিভাইসগুলো (যেমন- হার্ডডিস্ক, ফ্লপি ডিস্ক, ফ্ল্যাশডিস্ক) হচ্ছে সহায়ক মেমোরির। বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে প্রধান মেমোরিকে আরো দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ক) অস্থায়ী মেমোরি (Volatile Memory) খ) স্থায়ী মেমোরি (Non-volatile Memory )
কম্পিউটার বন্ধ করার সাথে সাথে অস্থায়ী মেমোরিতে সংরক্ষিত তথ্যগুলো মুছে যায়।
কম্পিউটারে প্রদত্ত তথ্যাবলি মাইক্রোপ্রসেসরে প্রক্রিয়াকরণের পরে যে সকল যন্ত্র বা ডিভাইস ফলাফল প্রকাশ করে সেগুলোই হচ্ছে আউটপুট ইউনিট। নিম্নে কতিপয় আউটপুট ডিভাইসের নাম উল্লেখ করা হলো।
১. মনিটর
২. প্রিন্টার
৩. স্পিকার
৪. ডিস্ক ড্রাইভ
৫. প্লটার
৬. শব্দ সংশ্লেষক
৭. মাইক্রোফিল্ম ও
৮. মাইক্রোচিপ ইত্যাদি ।